সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর অপচেষ্টায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)।
বিএফইউজে’র সভাপতি ওমর ফারুক ও মহাসচিব দীপ আজাদ আজ এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ জানান।
তারা বিবৃতিতে বলেন, দেশের সচেতন সকল মহলের মত সাংবাদিক সমাজও মনে করে কোটা পদ্ধতির একটি যৌক্তিক সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। এই দাবিতে যে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন তাদের সঙ্গে সাংবাদিক সমাজের ভিন্নমত নেই। সাংবাদিক হিসেবে গত কয়েক সপ্তাহের ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ শেষে আমাদের মন্তব্য হচ্ছে যে কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার করার দাবিটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন এই যৌক্তিক বিষয়টিকে পূর্ণতা দিতে আন্দোলনকারী, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
নেতৃদ্বয় বলেন, আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি যে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আন্দোলনের কোন কোন পর্যায়ে কেউ কেউ এমন আচরণ করছেন যা’ মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির প্রতিনিধিত্ব করছে। আমরা দৃঢভাবে বিশ্বাস করি এটি এই আন্দোলনের মূল সুর নয়। কিন্তু কোন বিশেষ মহল এই আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির পক্ষে, বাংলাদেশ বিরোধী বা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বিরোধী পথে পরিচালনা করার চেষ্টা করছে কি না এই প্রশ্নও এখন সামনে আসছে।
তারা বলেন, আন্দোলনকরারীদের কর্মসূচীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী সংবাদ মাধ্যম বিরোধী স্লোগান এবং সংবাদকর্মীদের ওপর আক্রমন এই ধারণাকে শক্ত ভিত্তি দিচ্ছে। আমরা এমন সব আচরণের নিন্দা জানাই।
তারা বলেন, সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকারের সমর্থনে স্লোগান দেয়াকে আমরা ধিক্কার জানাই। এ ঘটনায় আমরা বিস্মিত। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তারা আরো বলেন, এই প্রেক্ষাপটে সাংবাদিক সমাজ মনে করে, আন্দোলনকারীদের উচিত হবে আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ না বাড়িয়ে, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে সহায়তা করে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবিগুলোকে দৃঢ় আইনী ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করা, যাতে ভবিষ্যতে এ নিয়ে আর জটিলতা সৃষ্টি না হয়।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © দৈনিক স্বাধীন বাংলাদেশ