নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের পশ্চিমগাও এলাকায় বিল্লাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির বসতবাড়ী নির্মাণ কাজে বাঁধা প্রদান ও চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সন্ত্রাসী রাসেল গং’দের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। রূপগঞ্জের পশ্চিমগাও এলাকার মোঃ আবু তালেবের পুত্র মোঃ রাসেল (২৬), মৃত লাল মিয়ার পুত্র আওলাদ (৩০), মৃত আবেদ আলীর পুত্র মোঃ আলী আজগর (৩২), আবু তালেবের পুত্র মোঃ রফিকুল ইসলাম রুবেল (৩৯), মৃত সুবেদ আলীর পুত্র হাবিবুর রহমান (৪৯) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জন এ ঘটনার সাথে জড়িত বলে জানা যায়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বিল্লাল হোসেন জানায়, বিগত ১৫/০৩/২৪ ইং তারিখ আমার নিকট হইতে রাসেল গং তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। আমি চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে সন্ত্রাসীরা আমাকে প্রান নাশের হুমকী প্রদান করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০/০৩/২০২৪ ইং তারিখ রাসেল গং সহ আরও অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন সন্ত্রাসীগণ আমার নিকট চাঁদা গ্রহনের উদ্দেশ্যে আমার মালিকানাধীন পশ্চিমগাঁও মৌজাস্থিত ০৪ (চার) শতাংশ জমির উপর পাকা ৬ (ছয়) তলা দালানের ফাউন্ডেশন দিয়া নির্মান কাজ করার উদ্দেশ্যে নির্মানাধীন সামগ্রী ইট, বালু, রড, সিমেন্ট জড়ো করিয়া ১ তলা ছাদ দিয়া সম্পূর্ণ করার পূর্বেই নির্মান কাজ চলাকালীন সময়ে তারা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাসেল গং’দের সাথে থাকা অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জন সন্ত্রাসী আমার বসত বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমি গালিগালাজের কারন জিজ্ঞাসা করলে উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা উত্তেজিত হয়ে আমাকে বলেন তোর নিকট তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেছি। যদি এই এলাকায় তোর জমির উপর বিল্ডিং এর নির্মাণ কাজ করিতে চাস তবে আমাদের তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে। অন্যথায় আমরা কোন ধরনের নির্মাণ কাজ করতে দিব না।
আমি আমার নিজ মালিকানাধীন সম্পত্তির উপর আমি বসত বাড়ি তৈরী করার জন্য নির্মান কাজ করব, তোমাদেরকে চাঁদা দিব কেন? এই কথা বলার পর পরই সন্ত্রাসী রাসেল আমাকে বলেন আমাদেরকে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দিবি না, এই বলে উত্তেজিত হয়ে তিনি আমার কোমড়ে স্বজোরে লাথি মারে এবং সন্ত্রাসী আওলাদ ও সন্ত্রাসী হাবিবুর রহমান তিন লক্ষ টাকা চাঁদার দাবীতে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল, ঘুষি, ও লাথি মারিয়া শরীরে মারাত্মক নিলা ফুলা জখম করে এবং রাসেল গং’রা উত্তেজিত হয়ে আমাকে বলেন আমাদেরকে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দিবি, তা নাহলে তোকে নির্মাণ কাজ করতে দিবোনা এবং টাকা না দিলে তোকে জীবনে মারিয়া লাশ গুম করে ফেলবো।
এসময় সন্ত্রাসী রাসেল আমার নিকট হইতে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা আদায়ের দাবীতে তার হাতে থাকা দাড়ালো চাপাতি দিয়ে সিমেন্টের বস্তায় কোপ মেরে কেটে সিমেন্টের বস্তাগুলো এদিক সেদিক ফেলে দিয়ে প্রায় দশ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। সন্ত্রাসী আওলাদ তাদের দাবীকৃত চাঁদার টাকা আদায়ের জন্য তার হাতে থাকা লোহার শাবল দিয়ে নির্মাণাধীন বসতবাড়ীর নতুন ওয়াল এবং ওয়ালের আস্তর বাইড়াইয়া ফুটা ছিদ্র করে প্রায় পনের হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং সন্ত্রাসী মোঃ আলী আজগর তাদের দাবীকৃত চাঁদার তিন লক্ষ টাকার জন্য তার হাতে থাকা দাড়ালো রাম-দা দিয়ে পানির পাইপে কোপ মারলে পানির পাইপ এবং পানির ট্যাংকি কেটে প্রায় বাইশ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে, রফিকুল ইসলাম রুবেল আমার নিকট হইতে তিন লক্ষ টাকার চাঁদার দাবীতে তার হাতে থাকা লোহার পাইপ দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় বাড়ি মারলে, আমি তা বাম হাত দিয়া ফিরাইলে আমার হাতে নিলা ফুলা জখম হয়। এসময় হাবিবুর রহমান চাঁদার দাবীতে তার হাতে থাকা দাড়ালো চাপাতি দিয়ে আমার বিল্ডিংয়ের বাহিরে আস্তর করার জন্য ওস্তাগারদের মাচা তৈরীর সামগ্রী কোপাইয়া কেটে ফেলে দিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। তখন আমি চিৎকার করলে সন্ত্রাসী আলী আজগর আমাকে ঝাপটিয়ে ধরে এবং রফিকুল ইসলাম রুবেল আমার গলা চিপে ধরে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করার চেষ্টা করে। এরপর রাসেল গং’রা আমার বিল্ডিং তৈরীর নির্মাণাধীন সামগ্রী অর্থাৎ লোহার রড, সিমেন্ট ও অন্যান্য সামগ্রী সহ আনুমানিক এক লক্ষ বিশ হাজার টাকার মালামাল পিক আপ গাড়িতে উঠিয়ে অণ্যত্র স্থানে চুরি করে নিয়ে যায়।
এসময় বিল্লাল হোসেনের ডাক চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে স্থানীয়দের সহোযোগিতায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে বিগত ০২/০৪/২০২৪ইং তারিখে নারায়নগঞ্জের ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা গ্রহন করেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীগণ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে সুবিচারের দাবি জানান।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © দৈনিক স্বাধীন বাংলাদেশ