মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজের ইংরেজি সম্মান শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী জারিন তাসনীম খান প্রিয়ন্তী। কানাডা থেকে আসা বোনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে রাজধানীর বেইলি রোডের রেস্টুরেন্টের আগুনে পুড়ে লাশ হয়েছেন। প্রিয়ন্তী মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুরের অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন খানের মেয়ে। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি হরগঙ্গা কলেজের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। প্রিয়ন্তীর বড় বোন তাসনোভা খান সুহা গত বুধবার সন্তানসহ কানাডা থেকে ঢাকায় আসেন। তাই বাবা-মা মেহেরুন্নেসা ও বড় ভাই সাজেদ হোসেন পিয়ালের সঙ্গে ঢাকার ইস্কাটনে বোনের সঙ্গে দেখা করতে যান প্রিয়ন্তী। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ডিনার খাওয়াতে বড় বোন সুহা তাকে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁয় নিয়ে যান। এ সময় সুহার মেয়ে ও মামিশাশুড়িও সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু রেস্তোরাঁটিতে আগুন লাগার পর অন্য তিনজন বের হতে পারলেও পারেননি প্রিয়ন্তী। প্রিয়ন্তীর ভাই সাজেদ হোসেন পিয়াল জানান, আগুন লাগার পর রেস্তোরাঁটি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ায় কিছু দেখা যাচ্ছিল না। তার দুই বোন ঘাবড়ে গেলেও ঘটনার পরপরই সাড়ে চার বছরের সায়মাকে নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যান সুহার মামিশাশুড়ি। আর সুহা ছোট বোন প্রিয়ন্তীকে হাতে ধরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভবনের ওপর থেকে সিঁড়ি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে লোকজন নামছিল, আর ধোঁয়ার মধ্যে একপর্যায়ে প্রিয়ন্তীর হাতটি ছুটে যায়। হারিয়ে যায় অন্ধকারে। পরে সে আর বেরোতে পারেনি। প্রিয়ন্তীকে রেখেই সুহা বেরিয়ে আসে। শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মরদেহ শনাক্ত করেন স্বজনরা। পরে সকালে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বোনের সঙ্গে পিয়ালও ঢাকা গিয়েছিলেন। বোনের দাফনের ব্যবস্থা করতে বাড়ি ফিরে আসেন শুক্রবার। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে বোনের দাফনের ব্যবস্থা করেন। শুক্রবার জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে দুপুর ১টার দিকে তাঁর মরদেহ মুন্সীগঞ্জ সদরের পঞ্চসার এলাকায় পৌঁছায়।