সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার ও সারা দেশে হতাহতের ঘটনার বিচারের দাবিতে নগরীর চাষাঢ়ায় ‘ব্লকেড’ করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে চাষাঢ়ার মোড়ে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করলে শহরমুখী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সকাল থেকে শুরু হওয়া ‘ব্লকেড’ এ কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায় নি। চাষাঢ়ায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিজয় স্তম্ভের কাছে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন, রাস্তায় থেমে থাকা ট্রাকে উঠে কয়েকজন তরুণ-তরুণী বাংলাদেশের পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। চাষাঢ়া থেকে লিঙ্ক রোডমুখী সড়কের দিকে দেখা যায়, একটি বাস আড়াআড়িভাবে রাখে যান চলাচল বন্ধ রাথা হয়েছে। এরই সাথে মহিল কলেজের সামনে দেখা যায়, চাষাঢ়া থেকে পঞ্চবটীমুখী সড়কে ট্রেন লাইনের যান প্রতিরোধী ব্যারিকেড নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। চাষাড়া হয়ে দুই নং রেলগেটের দিকে আসার সময় দেখা যায়, বিভিন্ন অটোরিক্সা, মিশুক ও লেগুনা থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাত্রীদের সাথে কথা হলে তারা চলাচলে ভোগান্তি হচ্ছে বলে জানান। এছাড়াও, বিভিন্ন ওলি-গোলিতে মিশুক, প্রাইভেট কার ভিড় করতে শুরু করে যেখানে কিশোর বয়সী ছেলেদের যান চলাচলে তদারকি করতে দেখা যায়।
সিফাত নামে মিশুক চালক জানান, এম্বুলেন্স ও রোগী ছাড়া চাষাড়ার দিকে শিক্ষার্থীরা গাড়ি নিয়ে যেতে দিচ্ছে না। পঞ্চবটী যেতে গলাচিপা দিয়ে ঢুকে মাজদাইর হয়ে বের হচ্ছি। চাষাড়া এড়িয়ে যাত্রী নিয়ে পাশের এলাকার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। তবে বড় গাড়ীগুলো রাস্তায় আটকা পরে আছে।
অটোরিক্সা থেকে নেমে আসা আতাউর রহমান জানান, পাগলা থেকে মাকে নিয়ে এসেছি। মা অসুস্থ্য, চাষাড়ার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যেতে হবে। মার শরীর কিছুটা দুর্বল, হাটতে কষ্ট হচ্ছে উনার। তার জন্য ডাব কিনে নিয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে যাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধু রোডে বেশ কিছু কার্গো ট্রাক ও মালবোঝাই ট্রাক রাস্তায় বন্ধ অবস্থায় দেখা যায়। ট্রাকের চালকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, মাল বোঝাই করে ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ যেতে হলে চাষাড়া হয়ে যেতে হবে। কিন্তু ছাত্ররা সড়ক অবরোধ করায় আটকে আছে বড় গাড়ীগুলো। মো. মোহসীন নামে এক চালক জানান, ১২ টার দিকে নিতাইগঞ্জ থেকে কার্গো ট্রাক নিয়ে বিরিয়েছি। কিন্তু ছাত্রদের আন্দোলনে গাড়ী চলাচল বন্ধ। মাধবদী যাওয়ার কথা। প্রধান সড়ক ছাড়া অন্য কোথাও দিয়ে গাড়ী নেওয়া সম্ভব না। তাই ছাত্ররা সড়ক না ছাড়া পর্যন্ত গাড়ী আর নড়ছে না।
বঙ্গবন্ধু সড়কে শিক্ষার্থীদের একাধিকবার বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখা যায়। মিছিলে মাঝে মাঝে সড়কের এক পাশে অবস্থান নিয়ে তারা আন্দোলনে নিহতদের বিচারের দাবি জানান। প্রায় পাঁচ ঘন্টা পর সড়ক থেকে শিক্ষার্থীরা সরে যান ও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © দৈনিক স্বাধীন বাংলাদেশ