পঞ্চগড়ে উপজেলা নির্বাচনে ভোটের পক্ষে বক্তব্য দেওয়া একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। অডিওটি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদের। ওই অডিওতে তাঁকে নেতাকর্মীদের কৌশলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য বলতে শোনা যায়। একদিকে ভোটে অংশ নেওয়ায় দলের পাঁচ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, অন্যদিকে কৌশলে ভোটে অংশ নেওয়ার বিষয়ে তাঁর এমন বক্তব্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
যদিও তিনি এই অডিওকে সুপার এডিট করে প্রকাশ করা হয়েছে বলে দাবি করেন। রবিবার (৫ মে) দুপুরে এই অডিও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পৌঁছায়।
ফাঁস হওয়া অডিওতে বলতে শোনা যায়, ‘যারা ভোটের বিরুদ্ধে, জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নেই, তারা স্থানীয় রাজনীতি বোঝে না। তারা মনে করে, স্থানীয় রাজনীতি আর জাতীয় রাজনীতি এক, মূলত এক নয়।
তুমি জাতীয় নির্বাচন যেভাবে থামাতে পারছ, সেভাবে মেম্বার, চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাচন থামাতে পারবে না। তোমার কর্মী-সমর্থক কারো না কারো পক্ষে যাবেই, ঘুরবেই। আর যখন ঘুরবে ফিরবে সম্পর্ক তৈরি হবে, তখন তার দলে চলে যাবে। দলীয়ভাবে বিএনপি ভোটে যাচ্ছে না এ জন্য অনেকেই বলবে আলহামদুলিল্লাহ।
আওয়ামী লীগের লোকজনও আমাদের ভোটে নিরুৎসাহ করবে। আজকে বোদায় যদি উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান দিতে পারি, তাহলে অন্তত উপজেলা চত্বরে গিয়ে একটা বসার জায়গা পাব। চেয়ারম্যানের চেম্বারে গিয়ে বসতে পারব, এক কাপ চা খেতে পারব।’
অডিওতে আরো শোনা যায়, ‘আমার থানা পুলিশে কোনো সমস্যা হলে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান দিয়ে একটু হেমারিং করতে পারব। বরাদ্দ এলে দলের লোকজনকে সুযোগ সুবিধা নিয়ে দেওয়া যাবে।
জনপ্রতিনিধিশূন্য একটা দল টিকে থাকা অনেক কঠিন। আমরা সমর্থকনির্ভর একটা দল, আমাদের কর্মীর চেয়ে সমর্থক বেশি। তাদের উজ্জীবিত হতে হবে। সে ক্ষেত্রে আমি তোমাদের প্রস্তাব করছি, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা নির্বাচনে যাব এবং আমরা প্রার্থী দিয়েছি। আমাদের লোকজনকে উজ্জীবিত করতে হবে, আমরা মিটিং করব, মিছিল করব না, মিটিং-মিছিলের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেব না। এরই মধ্যে আমি জেনেছি এবারের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। তোমরা মন দিয়ে নির্বাচনটা করো, আশা করি সফল হব। আমাদের অনেক নেতাকর্মী বলবে বিএনপি ভোট বর্জন করেছে, তাও আমরা ভোট করছি। মূলত তারা দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে চায়। যারা এগুলো বলবে আগামী ২১ মের পরে প্রতিটি ইউনিয়ন কমিটি আমি পুনর্গঠন করব। তখন তাদের বলব, দলের মেইন স্ট্রিমে আপনার দরকার নেই। নির্বাচনে আমাদের প্রার্থী জয়ী করার জন্য যে যে কর্মসূচি নেওয়া দরকার তোমরা নিবা। আজ উপজেলার নেতাকর্মীদের নিয়ে বসেছি, এভাবে আমি প্রতিটি ইউনিয়নে গিয়ে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসব।’
ফরহাদ হোসেন আজাদ অডিও ফাঁসের বিষয়ে বলেন, ‘আমাকে হেয় করার জন্য সুপার এডিট করে এটি তৈরি করা হয়েছে। এই আধুনিক যুগে সব সম্ভব। আমাদের দলের যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তাদের পাঁচজনকে এরই মধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দিন-রাত না খেয়ে না ঘুমিয়ে আমরা নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’