একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে জাতীয় পার্টিতে (জাপা) তেমন মতভেদ ছিল না। দলের নেতাদের সঙ্গে সরকারের একটি সমঝোতা ছিল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। সম্প্রতি দলের এক যৌথ সভায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে জোরালো মত দিয়েছেন। এর পরও শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাবে এমনটিই ধরে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এরই মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে দলের মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু সতর্ক প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেছেন, সমঝোতার পথ এখনো বন্ধ হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন নীতিনির্ধারক বলেন, জাপার বিষয়ে সরকারের মনোভাব আগের চেয়ে বেশ পরিবর্তন হয়েছে। সরকার এখন তৃণমূল বিএনপি ও অন্যান্য ছোট ছোট রাজনৈতিক দলকে গুরুত্ব দিচ্ছে। একটি সূত্র জানায়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিষয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তিনি সরকারের বিপক্ষে গেলে দলের কর্তৃত্বও হারাতে পারেন। তাঁর পক্ষে নির্বাচন বর্জন করা খুবই কঠিন। জাপা চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মাসরুর মাওলা বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাঁরা একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবেন।
সাম্প্রতিক সব নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে অংশ নিয়েছে জাপা। এবার আওয়ামী লীগ ও জোটের শরিকসহ মোট ১৫টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি দলগুলো হলো জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), গণতন্ত্রী পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। শরিক জোটের প্রভাবশালী এক নেতা বলেন, আগামী এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে আসন বণ্টন হয়ে যাওয়া উচিত। সে বিষয়টি নিয়ে তারা আলোচনা করছেন। জোটের সবাই নির্বাচনমুখী চিন্তা করছে। এখন জোটে কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। সবাই এক হয়েই নির্বাচনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।