নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচন করতে আগ্রহী, বর্তমান সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সমর্থন দিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য, নাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু।
গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বাজেট অনুষ্ঠানে নাগরিক ও সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মেয়র আইভী বলেন, আপনারা ট্যাক্স দিবেন না, পানির বিল দিবেন না, আবার উন্নয়নও চাইবেন। ট্যাক্স-বিল না দিলে উন্নয়নটা আমি করবো কিভাবে? কমবেশী সকলকেই অংশগ্রহন করতে হবে। প্রত্যেকেরই একই অভিযোগ, এটা করবেন না, ওটা করবেন না, হ্যান না, ত্যান না। এর চেয়েও এমপিগিরি করা সোজা। আমার মনে হয়, যথেষ্ট হইছে চেয়ারম্যান, মেয়রগিরি করা। আমার মনে হয়, আমার নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি মনোনয়ন চাওয়া উচিত।
মেয়রের এমন বক্তব্যের সাথে সাথেই প্যানেল মেয়র-১ আব্দুল করিম বাবু তাকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, এটাই ঠিক কইছেন। বাবুর সমর্থনের ভিডিও ফুটেজ ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এদিকে, কাউন্সিলর বাবুকে নারায়ণগঞ্জবাসী ওসমান পরিবারের সমর্থক হিসেবেই চিনে। তাই ওসমান পরিবারের বর্তমান বড় ভাই সেলিম ওসমানের বিপরীতে মনোনয়ন চাওয়ার কথা বলা আইভীকে সমর্থনের বিষয়ে নানা গুঞ্জন চাউর হয়েছে শহরময়।
শহরবাসী বলছে, তবে কি কাউন্সিলর বাবু বলয় পরিবর্তন করেছেন, তবে কি বাবু ওসমান বলয় ছেড়ে আইভী বলয়ে যোগ দিয়েছেন?
রাজণৈতিক বিশ্লেষক মহলের মতে, মেয়রকে এমপি পদে সমর্থন দিয়ে আব্দুল করিম বাবু এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছেন। একদিকে, তিনি আওয়ামীলীগ নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন আওয়ামীলীগার হিসেবে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীকে সমর্থন করে নারায়ণগঞ্জ শহর-বন্দরের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উপকার করেছেন তিনি। তাদের কাধ থেকে লাঙ্গলের ভার কমানোর যে চেষ্টা তিনিও তাতে শরীক হয়েছেন।
অপরদিকে, মেয়র যদি কোনোভাবে এমপি নমিনেশন চায়। তাহলে হয়তো তাকে মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব যাবে তার কাধে। ফলে মেয়র হওয়ার তার দীর্ঘদিনের যে স্বপ্ন তাও পূরণ হবে।
এদিকে, ওসমানদের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত বাবুর এমন সমর্থনকে কোনোভাবেই ভালো চোখে দেখছেন না ওসমান সমর্থকরা। তারা বলছে, বাবু যে এতোদিন স্ট্যান্ডবাজির রাজনীতি করতে তা আজ আবারও প্রমাণিত হলো। তা নাহলে সেলিম ওসমানের বিপরীতে মনোনয়ন চাওয়া আইভীকে সে কিভাবে সমর্থন দিলো।
ঐ অনুষ্ঠানে মেয়র আইভী আরও বলেন, কারণ আমি যেই ধাচের মানুষ, আপনাদের সাথে প্রতিদিন বাক-বিতন্ডা না করে এমপি মনোনয়ন চাওয়াই ভালো। কি পরিমাণ জমি উদ্ধার করেছি আমরা (সিটি কর্পোরেশন), তা নারায়ণগঞ্জবাসী কল্পনাও করতে পারবে না। সেই জায়গাগুলোর মধ্যে বড় বড় ভবন করেছি। বন্দরে করেছি ৫০০ কোটি টাকার কাজ, সিদ্ধিরগঞ্জে করেছি আট থেকে নয়শত কোটি টাকার কাজ আর শহরে করেছি ১হাজার কোটি টাকারও বেশী কাজ। সবই কি প্রজেক্ট থেকে পেয়েছি, সবই কি জাইকা আর ওয়ার্ল্ড ব্যাংক দেয়। এই টাকা নারায়ণগঞ্জের জনগনের। আনোয়ার কাকা আমার তো মনে হয় ৫ আসনে আমার মনোনয়ন চাওয়া উচিত। কাকা আপনে তখন কি করবেন, আপনে তো কাকা মনোনয়ন চেয়ে বসে আছেন।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © দৈনিক স্বাধীন বাংলাদেশ